মাযহাব কি ও কেন

মাযহাব কি ও কেন?


     ☆মাযহাব একটি আরবী শব্দ। এর অর্থ- মত, মতবাদ, আদর্শ, চলার পথ ইত্যাদি। আল মু‘জামুল ওয়াসীত প্রণেতা বলেন- 
( المذهب ) الطريقة والمعتقد الذي يذهب إليه يقال ذهب مذهبا حسنا ويقال ما يدرى له مذهب أصل
 و( عند العلماء ) مجموعة من الآراء والنظريات العلمية والفلسفية ارتبط بعضها ببعض ارتباطا يجعلها وحدة منسقة
মাযহাব হলো নির্দিষ্ট পথ বা মত যার ওপর চলা হয়। যেমন বলা হয়, সে উত্তম পথে চলেছে। আরো বলা হয়- তার মূল মাযহাব জানা যায়না। আর উলামায়ে কিরামের নিকট মাযহাব হলো-

হুযুর কেবলা

হুযুর কেবলা

পীর না ধরিয়া কি কেহ রুহানিয়ৎ হাসিল করিতে পারে? আমরাও এই উক্তিতে বিশ্বাসী। আধ্যাতিক জ্ঞান বা ঈশ্বরকে আপন করে পাওয়ার লক্ষ্যেই শায়েখ দরকার। আমরা এটাও বিশ্বাস করি যে, ভূতপূর্বকাল হতে আমাদের পূর্বপুরুষদের মাধ্যমে যেসব আধ্যাতিক গুণীদের নাম শুনে আসছি তারা সবাই সত্যের ওপরই প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। তাদের ধারাবাহিকতায়-ই আমাদের এই বাংলার জমিনে ইসলামের আগমন ঘটে। যাবতীয় কুসংস্কার ও অলিক ধারনার  মূলৌৎপাটন করে সবাইকে একেশ্বরে বিশ্বাসী করে তোলেন। কিন্তু সমস্যা হলো: তারা যখন গত হলেন তখন তাদের কিছু অতিভক্ত মুরিদ এবং কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ তাদের সমাধিকে পূজার পাশাপাশি আয় রোজকারের ক্ষেত্র বানিয়ে ফেলে। অধিকাংশ মাজারেই দেখা যায় যে মানুষ গিয়ে সিজদা করে, মাজারের মাটি নিয়ে আসে রোগের শিফা ভেবে, আগড়বাতি ও ধুপ জ্বালে, পানি পড়া আনে, মাজারের দানবক্সে টাকা ফেলে ইত্যাদি ইত্যাদি। আমার জানতে খুব ইচ্ছে হয়- ভাউ! আল্লাহর ওলী ত গত হয়ে মাজারে শায়িত আছেন’ পানি পড়া কে দিচ্ছে? মাজারের দানবক্সের টাকায় কি করেন?  মাজারের মাটি শিফার উদ্দেশ্যে নেয়া এটাতো হিন্দুয়ানী প্রথা! কিন্তু আমরা তো মুসলিম। ধুপ- আগরবাতি বনাব আগুন জ্বেলে আমরা কি প্রমাণ করার চেষ্টা করছি? এটাই কি যে,

মসজিদে আকসার ইতিহাস

মসজিদে আকসার কান্না

মুসলমানদের প্রথম কিবলা বিখ্যাত ও প্রাচীন মসিজদ বায়তুল মুকাদ্দাস বা মসজিদে আকসা। যা ইসরাঈল ও ফিলিস্তিন সীমান্তে অবস্তিত জেরুজালেম নামক অতি প্রাচীন নগরীতে অধিকাংশ মানুষের নিকট এটি কুদস নামেও পরিচিত। ইসরাঈল ও ফিলিস্তিন দুটি রাষ্ট্রই জেরুজালেমকে নিজেদের রাজধানী মনে করে যদিও বেশীরভাগই ফিলিস্তিনের আওতায় রয়েছে এবং যার ফলস্বরুপ নির্মাণ, পূণনির্মাণ, যুদ্ধ, শান্তিচুক্তি, দখল, ভুমিক্ম্প ইত্যাদির মত ঘটনার সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে মসজিদে আল আকসা। ধারণা করা হয়; মক্কা নগরী থেকে বেশ দুরে অবস্থিত বিধায় একে আকসা নামে ডাকা হয়।মহানবী (.) মিরাজের রাতে এই মসজিদে নামাজ আদায় করেছিলেন। হযরত ইসা (আঃ)এর জন্মও এই জেরুজালেম শহরে। এছাড়াও অসংখ্য পয়গম্বরদের স্মৃতি বিজড়িত স্থান এই বায়তুল মাকদাস। কুরআনে জেরুজালেম শহরকে বরকতময় ও পবিত্র ঘোষণা দিয়ে আল্লাহ্ বলেন:
سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَى بِعَبْدِهِ لَيْلًا مِنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ الْأَقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ لِنُرِيَهُ مِنْ آيَاتِنَا
 “পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি,যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত, যার চার দিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি যাতে আমি তাঁকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই।-সূরা বনি ইসরাইল: ১

 মসজিদে আকসার নির্মাণ
মসজিদে আকসার নির্মাণকাল নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে।

আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের পরিচয়

আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের পরিচয়: ২য় পর্ব

     ★ছিদ্দীকীন এবং আউলিয়া কিরামগণের আদর্শ অনুসরন সম্পর্কে পবিত্র কুরান মাজীদে  সিরাতে মুস্তাকীমের পরিচয় দানের মধ্য দিয়ে এসেছেঃ

اهدنا الصراط المستقيم - صراط الذين أنعمت عليهم  

(আল্লাহ তায়ালা যাদের উপর নিয়ামত দিয়েছেন তাঁদের পথ সিরাতে মুস্তাকীম) আর মহান আল্লাহ তায়ালা যাদের উপর নিয়ামত দান করেছেন তাঁরা হচ্ছেন নিম্নোক্ত আয়াতে উল্লেখিত আম্বিয়া-মুরছালীন,ছিদ্দীকীন,শোহাদা এবং আউলিয়া কিরাম।

     ★মহান আল্লাহ বলেনঃ

ومن يطع الله والرسول فأولئك مع الذين أنعم الله عليهم من النبيين والصديقين والشهداء والصالحين و حسن أولئك رفيقا 

উপরোক্ত আয়াত প্রমাণ করে যে,নাবী-রাসূলগণ,সাহাবা কিরাম এবং আউলিয়া কিরামগণের পথ ও মতের উপর থাকাই হচ্ছে সিরাতুল মুস্তাকীমের উপর থাকা। তাই বলা যায়,আম্বিয়া–মুরছালীন,ছিদ্দীকীন,শোহাদা,রাসুল পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পবিত্র বংশধর,সাহাবা কিরাম এবং আউলিয়া কিরামগণের পথ ও মতের অনুসরনই হচ্ছে "সিরাতে মুস্তাকীমের" অনুসরন ।তাঁদের আদর্শ গ্রহণই হচ্ছে কুরআন এবংসুন্নাহের অনুসরন। আর তাঁদের অনুসারীগণই হচ্ছে নাজাত প্রাপ্ত দল ।হাদীস শরীফে যাদের নামকরণ করা হয়েছে " জামায়াত"(আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াত)বলে। 

     ★ইরশাদ হচ্ছেঃ

عن معاوية بن أبى سفيان أنه قام فينا فقال ألا إن من قبلكم من أهل الكتاب افترقوا على ثنتين وسبعين ملة وإن هذه الملة ستفترق على ثلاث و سبعين. ثنتان و سبعون فى النار وواحدة فى الجنة وهى الجماعة 

উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রমাণীত হলো সায়্যিদুনা রাসুল পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ওফাত মুবারকের পরে তাঁর বংশধর ,ছিদ্দীকীন, সাহাবা কিরাম ,আউলিয়া কিরাম এবং শোহাদাগণের পথ অনুসরন হচ্ছে " আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াত "অনুসরনের নামান্তর।

উল্লেখ্য যে – ইমাম আবুল হাসান আশয়ারী (ইঃ324হিঃ) এবং ইমাম আবুল মানছূর আল মাতুরীদী (ইঃ333হিঃ) ইমাম দ্বয়কে " আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামায়াত " এর ইমাম বলা হয়ে থাকে।এর দ্বারা এ উদ্দেশ্য নয় যে, তাঁদের পূর্বে আহলুস্ সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অস্তিত্ব ছিলনা।বরং সাহাবা কিরাম,তাবেয়ীন এবং তাবে তাবেয়ীন হচ্ছেন এই নামের অধিক উপযুক্ত।

উল্লেখিত ইমামদ্বয়কে " আহলুস্ সুন্নাত ওয়াল জামায়াত " এর ইমাম বলার কারণ হচ্ছে – 35 হিজরী সনে হযরত উসমান(রাঃ)এর শাহাদাতকে কেন্দ্র করে খারিজী ফিত্নার দানা বেঁধে উঠতে আরম্ভ করে।37 হিজরী সনে ছিফ্ফীনের যুদ্ধকে কেন্দ্র করে সে ফিতনার সম্পূর্ণ ভাবে প্রকাশ ঘটে। তারপর ক্রমান্বয়ে " মুর্যিয়া " " জাবরিয়া " ফেরকারও সূত্রপাত ঘটে। পরবর্তীতে বিখ্যাত তাবেয়ী ইমাম হাসান বাসরী (রাঃ)(ইঃ110 হিঃ) এর দরবারে কতিপয় বিদয়াতী মহান আল্লাহ পাকের জন্য জিসম (শরীর)সাব্যস্ত করার অপচেষ্টা চালায় । তাই তিনি তাদেরকে মজলিসের এক পাশে তাঁড়িয়ে দেন ।পরে তারা " হাশাভীয়্যাহ" ফেরকা হিসাবে পরিচিতি লাভ করে । ইমাম হাসান বাসরী (রাঃ) এর সাথে তাঁর ছাত্র ওয়াছেল বিন আতা (ইঃ131 হিঃ) অবাধ্যতা করে ভ্রান্ত মতবাদ গ্রহন করে। তিনি তাকেও তাঁর মজলিস থেকে তাঁড়িয়ে দেন ।পরবর্তীতে "মুতাজিলা "ফেরকা হিসাবে তারা পরিচিতি লাভ করে ।এভাবে ক্রমান্বয়ে ইসলামের ভিতরে বিভিন্ন বাতিল ফেরকার অনুপ্রবেশ ঘটতে থাকে। আগমন ঘটে ইমাম আবুল হাসান আশয়ারী(রাঃ)এর।তিনি সকল বাতিল ফেরকার ভ্রান্ত মতবাদ খন্ডন করে সঠিক মতাদর্শের উপর পবিত্র কুরআন এবং সুন্নাহের আলোকে বিভিন্ন কিতাব রচনা করেন ।তার সমসাময়িক ইমাম আবুল মানছুর আল মাতুরীদী(রাঃ)ও অনূরুপ খিদমতের আঞ্জাম দেন। চলবে.....

আরও পড়ুন:


রাসুল (দ.) এর রওজা যিয়ারত

রাসুল (দ.) এর রওজা যিয়ারত (ফতোয়া ও নিয়ম)

     মহানবী হযরত মুহাম্মদ (দ.) এর রওজা শরীফ  যিয়ারত করা অতিশয় বরকতের কাজ এবং সওয়াব লাভের একটি মাধ্যম। আর তাঁর রওজা শরীফ  যিয়ারত মহাগ্রন্থ আল কোরআন দ্বারা সাব্যস্ত এবং প্রমাণিত। মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন:

وَلَوْ أَنَّهُمْ إِذْ ظَلَمُوا أَنْفُسَهُمْ جَاءُوكَ فَاسْتَغْفَرُوا اللَّهَ وَاسْتَغْفَرَ لَهُمُ الرَّسُولُ لَوَجَدُوا اللَّهَ تَوَّابًا رَحِيمًا

′আর যদি তারা নিজেদের ওপর জুলুম করার পর আপনার নিকট আসে ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় এবং রাসুল (দ.)ও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তাহলে তারা আল্লাহ তায়ালাকে অতিশয় তাওবা কবুলকারী ও পরম দয়ালু হিসেবে পাবে।′[1]

     ★আলোচ্য আয়াতের মূল বক্তব্য হলো :

ইসলামের দৃষ্টিতে পীর

ইসলামের দৃষ্টিতে পীর

মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ পবিত্র কোনআনে ইরশাদ করেন:  আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে শুধু জ্ঞানীরাই আল্লাহকে ভয় করে।[1] এই আয়াতে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে,  জ্ঞানী যেহেতু আল্লাহর কুদরত সম্পর্কে অভিহিত; সেহেতু সে আল্লাহকে ভয় করা বা তার প্রতি অনুগত থাকাকে করণীয় কর্তব্য বলে ভাবে। ইসলামে যে জ্ঞানার্জনের তাগিদ দেয়া হয়েছে তার লক্ষ্য হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধান। 

     ★মহানবী (দ.) ইরশাদ করেন

الْعِلْمُ عِلْمَانِ: عِلْمٌ فِي الْقَلْبِ، فَذَلِكَ الْعِلْمُ النَّافِعُ، وَعِلْمٌ عَلَى اللِّسَانِ، فَذَلِكَ حُجَّةُ اللَّهِ عَلَى خَلْقِهِ

‘ইলম হলো দু’প্রকার। এক. ক্বলবী ইলম অর্থাৎ ইলমে তাছাউফ যা উপকারী ইলম। দুই. লিসানী ইলম অর্থাৎ ইলমে ফিক্বাহ; যা জিন-ইনসানের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ হতে দলীলস্বরূপ।[2]  
প্রথম প্রকার জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে

তাওবাকারীদের স্তর

তাওবাকারীদের স্তর

ঈমানদার ব্যক্তি তার গোনাহকে এত বিরাট মনে করে যেন সে একটি পাহাড়ের নিচে বসে আছে। আর সে আশংকা করছে যে, পাহাড়টা তার ওপর ধসে পড়বে। পাপিষ্ঠ ব্যক্তি তার গোনাহকে একটি মাছির মত মনে করে, যা তার নাকে চলে যায়।[1] 

     মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন:
 وَالَّذِينَ إِذَا فَعَلُوا فَاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوا أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللَّهَ فَاسْتَغْفَرُوا لِذُنُوبِهِمْ وَمَنْ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا اللَّهُ  

তারা কখনও কােন অশ্লীল কাজ করে ফেললে কিংবা কােন মন্দ কাজে জড়িত হয়ে নিজের উপর জুলুম করে ফেললে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজের পাপের জন্য ক্ষমা র্প্রাথনা কর। আল্লাহ ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করবনে?

ইসলামে নারীর মর্যাদা

ইসলামে নারীর মর্যাদা 

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর আবির্ভাবের পূর্বে  নারীদের অবস্থায় ছিল অত্যন্ত শোচনীয়। ইসলাম পূর্ব যুগে নারীদের কে শুধু ভোগের সামগ্রী হিসাবে ব্যবহার করা হত। তারা ছিল সমাজে, পরিবারে নিতান্ত নিকৃষ্ট। তাদের কোন অধিকার ছিলনা। এমন কি মেয়ের জন্ম হলে পিতা কন্যা সন্তানকে জীবন্ত মাটির নীচে পুতে দিত এ কলঙ্ক ঢাকার জন্য। প্রাচীন হিন্দু শাস্ত্রে এমন বর্ণনা আছে:  মৃত্যু, নরক, আগুন, বিষ, সর্প এর কোনটি নারীর অপেক্ষা মারান্তক নয়। যুবতী নারীকে প্রতিমার উদ্দেশ্যে বলি দেয়া হত দেবতার সন্তুষ্টির জন্য, বৃষ্টি ধন -দৌলত লাভের জন্য। স্বামীর মৃত্যুর সাথে স্ত্রী সহ মৃত্যু বরণ বা সতীদাহ পালন হিন্দু সমাজের রীতি। নারীকে সকল পাপ অন্যায় ও অপবিত্রতার কেন্দ্র বা উৎস বলে ঘৃণা করা হত। তারা বলতো: নারী হচ্ছে শয়তানের বাহন। নারীরা হচ্ছে এমন বিষধর সাপ যা পুরুষকে দংশন করতে কখনো কসুর করে না।

এথেন্স বাসিরা সভ্যতা ও সংস্কৃতির ইতিহাসে উল্লেখ্য যোগ্য প্রাচীনতম জাতী। সেখানেও নারীকে পরিত্যক্ত সামগ্রীর মতো মনে করা হতো। বাজারে প্রকাশ্য ভাবে নারীর বেচাকেনা হতো। সন্তান প্রসব লালন- পালন ছাড়া

ঈদে মিলাদুন্নবী দ.

 ঈদে মিলাদুন নবী (দ.)

পবিত্র ঈদে মিলাদুন নবী (দ.) উপলক্ষে আমরা প্রতিবছর রবিউল আউয়াল মাসে আনন্দ উদযাপন করে থাকি । বড়ই বেদনাদায়ক বিষয় হচ্ছে আমাদের উক্ত নেক আমলকে কিছু জাহেল বা নবী বিদ্বেষীরা হারাম , নাজায়েজ এবং শিরক বলে সাধারণ ঈমানদার সুন্নি মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যাছে । আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে  আমি নূর নবী (দ.) এর একজন তুচ্ছ গোলাম হিসেবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন নবী (দ.) উপলক্ষে আনন্দ উদযাপন করার বৈধতা ও শরীয়তে তার অস্তিত্ব প্রমাণের সাথে মিলাদুন নবী অস্বীকারকারীদের জবাব দেয়ার জন্য পোষ্টটি লেখার সৌভাগ্য লাভ করেছি আলহামদুলিল্লাহ ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ ।

ভূমিকাতেই সবাইকে  সহজ ভাবে বুঝার ও তাদের অতিরিক্ত প্রশ্ন বন্ধের জন্যে শুরুতেই যে বিষয়টি বলে নিতে হচ্ছে সেটা হল আমরা ঈদে মিলাদুন নবী (দ.) উদযাপনের দালীল কুরআন ও হাদীসের আলোকেই উপস্থাপন করবো

হুযুর কেবলা (পীরের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি)

হুযুর কেবলা


আমাদের ইসলাম ধর্ম ইফরাত ও তাফরিতের মাঝামাঝি, ধর্মীয় জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিমাত্রই এটা উপলব্ধি করতে পারেন। কেননা, শিথীলতা ও বাড়াবাড়ি আগেরকার যুগের ধর্মে ছিল। ইসলামে সর্ব প্রথম ঈমান আনা হয় একমাত্র আল্লাহর ওপর এবং তার রাসুলের ওপর। রাসুল (দ.) কে ভালোবাসা ঈমানের পরিপূর্ণতার জন্য আবশ্যক, তাই শুরু দিক থেকে আজ পর্যন্ত  মুসলমানগণ রাসুল (দ.) কে তার স্বীয় আত্মা ও যাবতীয় কিছু থেকে সবচেয়ে বেশী ভালোবাসে। এটা শরীয়তের কাম্য এবং সবার ঈমানী দায়িত্ব। কিন্তু পীরকেও কি নিজের আত্মা ও যাবতীয় কিছু থেকে অধিক ভালোবাসা শরীয়তের কাম্য?

আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের পরিচয়

আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের পরিচয়: ১ম পর্ব

অন্ধকারের ধূম্রজালে আবদ্ধ, ভ্রান্তির শৃংঙ্খলে বেষ্টিত, কুফর ও শিরকের দাবানলে দগ্ধ, পৃথিবীর মোহে আসক্ত, কিংকর্তব্যবিমূঢ় দিশেহারা মানুষকে সঠিক পথের দিশা দানের জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুক্তির দূত , পথ হারা মানুষের সুপথের দিশারী , রাহামাতুল্লিল আলামীন সায়্যিদুনা মুহাম্মাদ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে তাঁর পক্ষ থেকে রাসূল হিসাবে এ ধরাধামে পাঠিয়েছেন । তাঁর আগমনের পর হক-বাতিলের সঠিক পরিচয় সকলের নিকট স্পষ্ট হয়ে উঠে । অসত্যের সকল নিশানা থেকে সত্য তার সর্বাঙ্গ সুন্দর রূপ নিয়ে বের হয়ে আসে ।


    হাদীস শরীফে এসেছেঃ
إن بني إسرائيل افترقوا على إحدى و سبعين ملة و تفترق أمتي على ثلاث و سبعين ملة كلها في النار إلا ملة واحدة فقيل له : ما الواحدة ؟ قال : ما أنا عليه اليوم و أصحابي
বনী ঈসরাঈল সম্প্রদায় একাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছিল। আর আমার উম্মত তিহাত্তর দলে বিভক্ত হবে, সব দল জাহান্নামে যাবে, কিন্তু একটি দল জান্নাতে যাবে। তখন সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন হে আল্লাহর রাসুল ওই দলটি কোনটা হুজুর (সাঃ) বললেন,

নবী (দ.) এর ওফাত দিবস কি ১২ ই রবিউল আউয়াল?

নবী (দ.) এর ওফাত দিবস কি ১২ ই রবিউল আউয়াল?


আজকাল মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরোধীতা করতে গিয়ে অনেকেই বলে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম তারিখ নিয়ে ইখতিলাফ আছে, কিন্তু ইন্তেকালের তারিখ নিয়ে কোন ইখতিলাফ নেই। তাই ১২ ই রবিউল আউয়াল নবীজীর ইন্তেকালের তারিখে শোক পালন না করে মিলাদীরা আনন্দ উপভোগ করে কেন? এমন কথা রবিউল আউয়াল মাস আসলে অনেক মিলাদ বিরোধী ভাইদের মুখ থেকে শোনা যায়। আজ আমরা আলোচনা করব, আসলে বিষয়টি কতটা সত্য? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইন্তেকালের তারিখ নিয়ে কোন ইখতিলাফ নেই?

গান শোনার হুকুম

ইসলামে গান শোনার হুকুম

আজকাল সময় কাটানোর জন্য যে গুলোকে বিনোদন মনে করা হয়, সে ব্যাপারে ইসলামের বিধান কি? তা আমরা নিম্নে উল্লেখ করছি। যদি আমরা এগুলোকে শরীয়তের দৃষ্টিতে দেখি; তাহলে দেখা যাবে এগুলো বিনোদন নয়, এগুলো হলো মন, মস্তিষ্ক ও আত্মাকে ক্ষত বিক্ষত করা।

♫ গান শোনা

অন্তরের প্রশান্তি বা সাময়িক আনন্দের জন্য ভালো কবিতা পাঠ করা শুধু বৈধই নয়, বরং এ ব্যাপারে সাহাবায়ে কেরাম ও সলফে সালেহীনদের থেকেও বর্ণনা রয়েছে। কিন্তু, এমন গান যাতে বাদ্য যন্ত্র ব্যবহার করা হয় অথবা গায়রে মাহরাম মহিলার কন্ঠে হয়- তাহলে তা শুধু হারামই নয়; বরং রাসুলুল্লাহ (দ.) কে আমাদের মাঝে পাঠানোর উদ্দেশ্যের পরিপন্থি। রাসুলুল্লাহ (দ.) বলেছেন: আল্লাহ আমাকে হেদায়াত ও রহমতস্বরুপ পাঠিয়েছেন এবং আল্লাহ আমাকে গান-বাদ্য, ক্রুশ ও জাহিলিয়াতের প্রথাকে ধ্বংস করার নির্দেশ দিয়েছেন। বুখারী শরীফে এসেছে:

ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উদযাপনের ইতিহাস

ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উদযাপনের ইতিহাস

ড. মুহা: সাইফুল ইসলাম আযহারী

     ☆সর্বপ্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদে মিলাদুন্নবী উদাযাপনকারী সম্পর্কে আল্লামা ইবনে কাছীর (র.) البداية والنهاية  নামক ইতিহাসের কিতাবে বলেন: মালেক মুজাফ্ফর আবু সাঈদ বিন জয়নুদ্দিন (আরবলের বাদশাহ)। তিনি প্রতি বছর রবিউল আউয়াল মাসে স্বীয় শহরে জৌলুসর্পূণভাবে বিরাট মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করতেন। তথায় বহু সুফী, আলেম ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকতেন। তিনি একজন বেনজির বীর, আলেম, বিচারক ছিলেন। 
মিলাদুন্নবী সম্পর্কে সর্বপ্রথম কিতাব রচনা করেন ইবনে দাহিয়াহ (র.) যার নাম ছিল : التنوير بمولد البشير النذير  এবং এর জন্য তাকে একহাজার দিনার উপঢৌকন দেওয়া হয়।[1] 

     এ বাদশাহর ব্যাপারে ইমাম জাহাবী (র.) তদ্বীয় سير أعلام النبلاء কিতাবে বলেছেন : 
  
كان متواضعا ،خيرا، سنيا يحب الفقهاء والمحدثين
  
তিনি ছিলেন বিনয়ী, সৎ, মর্যাদাবান। তিনি ফকিহগণ ও মুহাদ্দিসগণকে ভালোবাসতে ও পছন্দ করতেন।[২]

     প্রখ্যাত আলেম ইবনে জাওযী (র.) এর নাতি ইমাম ইউসুফ ইবনে আব্দুল্লাহ সাবত (র.) বলেন :

 وكان يحضر عنده في المولد أعيان العلماء والصوفية

মিলাদুন্নবী উদযাপনকালে তার নিকট আলেম ও সুফীদের নেতৃস্থানীয়গণ উপস্থিত হতেন।[৩]

বিভ্রান্তির জবাব

     বলা হয়ে থাকে যে, সর্বপ্রথম ফাতেমী খেলাফতের লোকজনই মিলাদুন্নবী উদযাপন করেন। আর তারা হলো শিয়া, রাফেযীমতালম্বী আব্দুল্লাহ ইবনে সাবার নাতি পূতী। এ কথার প্রবর্তক হলেন আল্লামা ইবনে কাছীর (র.)। তিনি البداية والنهاية নামক ইতিহাসের কিতাবের ১ম খন্ডের ১৭২ নং পৃষ্ঠাতে বলেন :