ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উদযাপনের ইতিহাস
☆সর্বপ্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদে মিলাদুন্নবী উদাযাপনকারী সম্পর্কে আল্লামা ইবনে কাছীর (র.) البداية والنهاية নামক ইতিহাসের কিতাবে বলেন: মালেক মুজাফ্ফর আবু সাঈদ বিন জয়নুদ্দিন (আরবলের বাদশাহ)। তিনি প্রতি বছর রবিউল আউয়াল মাসে স্বীয় শহরে জৌলুসর্পূণভাবে বিরাট মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করতেন। তথায় বহু সুফী, আলেম ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকতেন। তিনি একজন বেনজির বীর, আলেম, বিচারক ছিলেন।
মিলাদুন্নবী সম্পর্কে সর্বপ্রথম কিতাব রচনা করেন ইবনে দাহিয়াহ (র.) যার নাম ছিল : التنوير بمولد البشير النذير এবং এর জন্য তাকে একহাজার দিনার উপঢৌকন দেওয়া হয়।[1]
☆এ বাদশাহর ব্যাপারে ইমাম জাহাবী (র.) তদ্বীয় سير أعلام النبلاء কিতাবে বলেছেন :
كان متواضعا ،خيرا، سنيا يحب الفقهاء والمحدثين
তিনি ছিলেন বিনয়ী, সৎ, মর্যাদাবান। তিনি ফকিহগণ ও মুহাদ্দিসগণকে ভালোবাসতে ও পছন্দ করতেন।[২]
☆প্রখ্যাত আলেম ইবনে জাওযী (র.) এর নাতি ইমাম ইউসুফ ইবনে আব্দুল্লাহ সাবত (র.) বলেন :
وكان يحضر عنده في المولد أعيان العلماء والصوفية
মিলাদুন্নবী উদযাপনকালে তার নিকট আলেম ও সুফীদের নেতৃস্থানীয়গণ উপস্থিত হতেন।[৩]
বিভ্রান্তির জবাব
বলা হয়ে থাকে যে, সর্বপ্রথম ফাতেমী খেলাফতের লোকজনই মিলাদুন্নবী উদযাপন করেন। আর তারা হলো শিয়া, রাফেযীমতালম্বী আব্দুল্লাহ ইবনে সাবার নাতি পূতী। এ কথার প্রবর্তক হলেন আল্লামা ইবনে কাছীর (র.)। তিনি البداية والنهاية নামক ইতিহাসের কিতাবের ১ম খন্ডের ১৭২ নং পৃষ্ঠাতে বলেন :
أن الدولة الفاطمية ...... ومنها الاحتفال بمولد النبي صلى الله عليه وسلم
'ফাতেমী খিলাফত (যা ছিল আব্দুল্লাহ মাইমুন আল কাদাহ ইহুদীর সাথে সম্পর্কযুক্ত, তারা মিসরে ৩৫৭ হিঃ – ৫৬৭ হিঃ পর্যন্ত রাজত্ব করেছিল) এর সময়ে বিভিন্ন দিনে বিবিধ উৎসবের আয়োজন করা হত। আর মিলাদুন্নবী (দ.) ও তাদের আয়োজনের একটি ছিল।'
জবাব :
সাইয়্যেদ মুহাম্মদ ইবনে আলাবি আল মক্কী এ অপবাদের জবাব দিয়েছেন তদ্বীয় কিতাব حول الإحتفال بذكرى المولد النبوى الشريف এ। তিনি বলেন : 'তোমরা যে উদ্ধৃতি দাও আমি বলব : আল্লাহর কসম তোমরা মিথ্যাবাদী। হাফেজ ইবনে কাসীর (র.) এর কথা আমি দেখেছি, কিন্তু তোমরা যা নকল করেছ তা নিঃসন্দেহে চোখকে ধোঁকা দেওয়া, তাদলীস এবং আমানতের খেয়ানত মাত্র। যদি তোমরা তোমাদের কথায় সত্যবাদী হও, তবে البداية والنهاية কিতাব থেকে ঐ কথা বের করে দেখাও। কোথায় গেল আপনাদের সে দাবী যে, আপনার আদল ও পরিপূর্ণ ইসনসাফের ভিত্তিতে এটাকে বিশ্লেষণ করেছেন! বরং এটা হলো চোখকে ধোঁকা দেওয়া এবং নিজ মতাদর্শের অন্ধত্ব মাত্র। তারপরেও তাদেরকে কিভাবে বিশ্বাস করবো? হে আমার মুসলিম ভাইগণ ! মুসলিম মনিষীদের উদ্ধৃতি গ্রহনের ক্ষেত্রে এটা হলো তাদের চরিত্র।[4] ইবনে কাসীর (র.) এর মূল মতামত হলো :
الاجود ... شجاعا فاتكا عالما عادلاالملك المظفر أبو سعيد الكوكبري ( ت630هـ) أحد
আরও পড়ুন:
[১]তাফসীরে রুহুল বায়ান, ইসমাঈল হাক্কী র., প্রকাশক : দারুল ফিকর; বইরুত, তাফসীরে সুরা ফাতহ, ৯ম খন্ড, পৃঃ ৫৬
[২]সাইয়্যেদ মুহাম্মদ আলাবি র. حول الاحتفال بذكرى مولد النبي, প্রকাশক : দারু জাওয়ামিউল কালিম; কায়রো, পৃষ্ঠা: ৫৬।
[৩] আবুল ফিদা ইসমাঈল ইবনে ওমর ইবনে কাসীর র. البداية والنهاية،, প্রকাশক: দারুল বদর’ মিসর, খন্ড নং ১৩।
[৩] আবুল ফিদা ইসমাঈল ইবনে ওমর ইবনে কাসীর র. البداية والنهاية،, প্রকাশক: দারুল বদর’ মিসর, খন্ড নং ১৩।
[৪]সাইয়্যেদ মুহাম্মদ আলাবি র. حول الاحتفال بذكرى مولد النبي, প্রকাশক : দারু জাওয়ামিউল কালিম; কায়রো, পৃষ্ঠা: ৫৬।
No comments:
Post a Comment