তাহাবী শরীফের বাংলা অনুবাদ: সহজেই ডাউনলোড করুন

শরহু মায়ানিল আছার বা তাহাবী শরীফ হানাফী মাযহাবের দলীল ভিত্তিক একটি হাদীস সংকলনগ্রন্থ। মানব জীবনের প্রয়োজনীয় আহকাম বিষয়ক হাদীসগুলো এ কিতাবে একত্রিত করা হয়েছে। গ্রন্থটি বিভিন্ন অনুচ্ছেদে বিভক্ত। প্রতিটি অধ্যায়ে নাসিখ, মানসুখ, বিশেষজ্ঞ আলিম ও মনীষীদের ব্যাখ্যা - বিশ্লেষণসমূহ  সন্নিবেশিত। শরীয়াহর বিভিন্ন বিষয় সম্পকে ইমাম আবু জা’ফর তাহাবী র. (মৃতু সন : ৩২১ হিঃ) এর সুচিন্তিত মতামত এ কিতাবে বিস্তারিতভাবে আলোচিত হয়েছে। 

ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত বাংলা অনুবাদগুলো এখনই ডাউনলোড করে নিন।
১ম খন্ড
 ↡
২য় খন্ড


ইমাম আবু জা’ফর তাহাবী (রহ:)-এর জীবনী
যে সকল মনীষীর যাদু কাঠির পরশে ফিক্হ শাস্ত্র উৎকর্ষের সোপান বেয়ে মর্যাদার শৈল চূড়ায় এবং উন্নতির গিরিশৃঙ্গে সমাসীন হয়েছে তাদের মধ্যে যুক্তিবাদী, সুপণ্ডিত ইমাম আবু ফা’ফর তাহাবী (রহ:) ছিলেন ফিক্হ শাস্ত্র গগনের দীপ্তরবি।

পরিচিতি: 
তাঁর নাম আহমদ, পিতার নাম মুহাম্মদ, উপনাম আবু জা’ফর, দাদার নাম সালামা, নিসবতী নাম তাহাবী, আযদী, মিসরী, হাজরী, হানাফী।

বংশ পরিচিতি:
তাহাবী শরীফে তাঁর বংশ পরিচয় নিম্নবর্ণিত পন্থায় উল্লেখ করা হয়েছে- 
ইমাম তাহাবী (রহ:) এর পূর্ণ নাম ইমাম হাফিয আবূ জা’ফর আহমদ ইবন মুহাম্মদ ইবন সালামা ইবন আবদুল মালিক ইবন সুলাইম ইবন খাব্বাব আযদী হাজারী মিসরী আত-তাহাবী আল-হানাফী।

জন্ম বৃত্তান্ত:
তিনি বর্তমান মিসরের ‘তাহা’ নামক প্রাচীন গ্রামে ২৩৮ হিজরীর ১২/১০ রবিউল আওয়াল রবিবার শুভ জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্ব পুরুষগণ ইয়ামানের সুপ্রসিদ্ধ আয্দ এবং এর শাখা হাজার গোত্রভুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে মিসর বিজয়ের পর তারা মিসরে এসে বসবাস শুরুকরেন। যেহেতু তাঁর পূর্বপুরুষগণ ইয়ামানের আযদ ও হাজার গোত্রের অধিবাসী ছিলেন, এজন্য ইমাম তাহাবী (রহ:) কে আযদী ও হজারী বলা হয়। আর যেহেতু মিসরের ‘তাহা’ নামক প্রাচীন পল্লীতে তাঁর জন্ম এজন্য তাঁকে মিসরী ও তাহাবী বলা হয়।

শৈশব:
তাঁর শৈশবকাল ছিল অত্যন্ত পূতঃপবিত্র ও নির্মল। তিনি কখনো পাপাচার বা গর্হিত কাজের সাথে জড়িত ছিলেন না। শৈশবকাল হতেই শিক্ষার প্রতি তাঁর অসাধারণ অনুরাগ পরিলক্ষিত হয়।

শিক্ষালাভ: 
তাঁর শিক্ষা জীবনের সূচনা হয় তাঁর মামা আবু ইবরাহীম ইসমাঈল ইবনে ইয়াহিয়া মুযানী (রহ:) এর নিকট। মুযানী শাফেয়ী মাযহাবের একজন প্রখ্যাত আলেম ছিলেন। আল্লামামুযানী (রহ:) তখন মিশরে অবস্থান করতেন। ইমাম আবু জা’ফর তাহাবী (রহ:) জ্ঞান পিপাসা নিবৃত করার মানসে স্বীয় আবাসস্থল থেকে মিশরে আসেন।

তিনি জ্ঞান আহরণের মিমিত্তে অনেক জায়গা সফর করেন। যেখানেই কোন জ্ঞান তাপসের সন্ধান পেতেন সেখানে গিয়ে উপস্থিত হতেন এবং জ্ঞান পিপাসা নিবৃত করতেন। ২৬৮ হিজরিতে তিনি সিরিয়া ভ্রমণ করেন। তা ছাড়া বায়তুল মুকাদ্দাস, আসকালান ইত্যাদি স্থানে মনীষীদের থেকে হাদীস শ্রবণ করেন। দামেশকের আবু আযেম আব্দুল হামীদ থেকে ইলমে ফিকহের জ্ঞান লাভ করেন। বিভিন্ন দেশের মনীষীদের থেকে জ্ঞানার্জন করে ২৬৯ হিজরিতে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন।

শিক্ষকমন্ডলী:
তিনি অসংখ্য উস্তাদ থেকে ফিক্হ, তাফসীর, হাদীস, আরবী সাহিত্য, নাহু, সরফ, বালাগাত, মানতিক ইত্যাদি বিষয়ের জ্ঞান লাভ করেন। 
তাঁর প্রসিদ্ধ উস্তাদগণ হলেন-
০১। ইবরাহীম ইবনে আবু দাউদ বারলাছী, 
০২। ইবরাহীম ইবনে যানকাদ খাওলানী, 
০৩। ইবরাহীম ইবনে মুহাম্মদ,
০৪। ইবরাহীম ইবনে মারযুক বসরী, 
০৫। আহমদ ইবনে কাসেম কূফী, 
০৬। আহমদ ইবনে দাউদ ছাদুছী,
০৭। আহমদ ইবনে সাহল রাযী, 
০৮। আহমদ ইবনে আছাম মুযানী, 
০৯। আহমদ ইবনে মাসউদ মাকদাসী, 
১০। আহমদ ইবনে সাঈদ ফাহরী, 
১১। আবু বশির আহমদ দুলাবী, 
১২। ইসহাক ইবনে ইবরাহীম, 
১৩। ইসহাক ইবনে হাসান, 
১৪। ইসমাঈল ইবনে ইয়াহিয়া মুযানী, 
১৫। বাহার ইবনে নসর খাওলানী, 
১৬। বাকার ইবনে কুতাইবা, 
১৭। মুহাম্মদ ইবনে সালামা তাহাবী প্রমুখ।

সহচর ও ছাত্রবৃন্দ
অগণিত জ্ঞান পিপাসু তাঁর নিকট হতে জ্ঞান আহরণে নিজেদেরকে ধন্য করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য ছাত্রগণ হলেন-
০১। আবু উসমান আহমদ ইবনে ইবরাহীম,
০২। আহমদ ইবনে আবদুল ওয়ারেস যুজাজ, 
০৩। আহমদ ইবনে মুহাম্মদ দামেগানী, 
০৪। আবু মুহাম্মদ হাসান ইবনে কাসেম, 
০৫। সুয়ালমান ইবনে আহমদ তিবরানী, 
০৬। আবু মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ ইবনে হাদীদ,
০৭। আবদুর রহমান ইবনে ইসহাক জাওহারী, 
০৮। আবুল কাসেম উবায়দুল্লাহ ইবনে আলী দাউদী প্রমুখ।

মাযহাব:
ইমাম আবু জা’ফর তাহাবী (রহ:) জীবনের ক্রমোন্নতির সূচনাতে স্বীয় মামা আবু ইবরাহীম মুযানী শাফেয়ী (রহ:)-এর কাছে ইলমে ফিক্হ শিক্ষা আরম্ভ করেন। প্রথমত তিনি ইমাম মুযানী (রহ:) থেকে শিক্ষা লাভ করে তাঁরই মাযহাব ‘শাফিঈ মাযহাব’ গ্রহণ করে নিয়েছিলেন। তারপর বোধ শক্তি যত বাড়তে থাকে ইনকিলাব-এর দ্বার তত উন্মুক্ত হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত তিনি শাফেয়ী মাযহাব ত্যাগ করে হানাফী মাযহাবের অনুসারী হন। যখন ইমাম আহমদ ইবন আবী আমরান হানাফী (রহ:) মিসরের কাজী (বিচারক) হিসেবে আগমন করেন তখন তিনি মামার দরস ও মাযহাব পুরত্যাগ করে ইমাম আহমদ ইবন আবী ইমরান হানাফী (রহ:)Ñএর দরস ও মাযহাব গ্রহণ করেন।


No comments:

Post a Comment